শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ঢাকায় এসে ২০ জুলাইযোদ্ধার দৃষ্টিশক্তি ফেরালেন ব্রিটিশ চিকিৎসকেরা

টিএনসি ডেস্ক

প্রকাশিত: : এপ্রিল ১৫, ২০২৫, ০৩:২৮ পিএম

ঢাকায় এসে ২০ জুলাইযোদ্ধার দৃষ্টিশক্তি ফেরালেন ব্রিটিশ চিকিৎসকেরা

লন্ডনের মুরফিল্ডস আই হসপিটালের বিশেষজ্ঞ শল্যচিকিৎসকেরা গত গ্রীষ্মে বাংলাদেশে আন্দোলন চলাকালে আহত ২০ জনের বেশি তরুণের দৃষ্টি ফিরিয়ে আনতে সফল হয়েছেন।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আমন্ত্রণে কয়েকজন ব্রিটিশ শল্য চিকিৎসক সম্প্রতি ঢাকায় এসেছিলেন। তাঁদের মূল উদ্দেশ্য ছিল, গত বছরের জুলাই-আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় চোখে গুলিবিদ্ধ হয়ে দৃষ্টি হারানো আন্দোলনকারীদের উন্নত চিকিৎসা দেওয়া। ইতোমধ্যে এই ব্রিটিশ চিকিৎসকেরা অন্তত ২০ জন আহতের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন।

মুরফিল্ডসের ভিটেরিওরেটিনাল পরামর্শক মাহি মুকিত ও নিয়াজ ইসলাম গত মাসে ঢাকায় আসেন। এ সময় তাঁরা ১৪ থেকে ৩০ বছর বয়সী প্রায় ১৫০ জন রোগীর চোখের অবস্থা পরীক্ষা করেন। ২০২৪ সালের জুলাইয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে তাঁদের চোখে গুরুতর আঘাত লাগে। আহতদের অনেকেই সেসময় তাৎক্ষণিক চিকিৎসা পেলেও পরিপূর্ণ চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত ছিলেন।

মাহি মুকিত বলেন, ‘এমন মানবিক উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আমি সম্মানিত। যাঁরা মাসের পর মাস অন্ধকারে ছিলেন, তাঁদের আলো ফিরিয়ে দিতে পারার অভিজ্ঞতা আমাদের সবার জন্য দারুণ।’

এই বিশেষজ্ঞ দল মাত্র দুই দিনে ২৪ জন রোগীর চোখের সফল অস্ত্রোপচার করেন। যাঁদের অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হয়নি, তাঁদের জন্য পুনর্বাসন ও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা পরিকল্পনা দেওয়া হয়েছে।

মাহি মুকিত জানান, অস্ত্রোপচার করা রোগীদের মধ্যে অন্যতম রোহান, যার দুই চোখেই গুলি লেগেছিল। এক চোখের অবস্থা একেবারে আশাহীন হলেও অপর চোখের রেটিনাল ডিটাচমেন্ট এবং ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু অপসারণ করে অস্ত্রোপচার করা হয়। তিনি আশাবাদী, অস্ত্রোপচারের পর রোহানের দৃষ্টি ধীরে ধীরে উন্নত হবে।

এ ছাড়া, মিনহাজ নামে ২০ বছর বয়সী এক তরুণের চোখে গুলির অংশ এখনো রয়ে গেছে। তারও অস্ত্রোপচার করা হয় এবং চোখের ক্ষয়ক্ষতি মেরামতের চেষ্টা করা হয়।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের জুলাইয়ের সেই বিক্ষোভকালে আনুমানিক ১ হাজার মানুষ চোখের আঘাতে আক্রান্ত হন। এর মধ্যে ঢাকার জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে প্রায় ৭০০ জন জরুরি চিকিৎসা নেন।

এই উদ্যোগ শুধু আহতদের জন্যই নয়, পুরো দেশের চিকিৎসা-ইতিহাসে এক ব্যতিক্রমী অধ্যায় হয়ে থাকল।

Link copied!