প্রকাশিত: : মার্চ ১৯, ২০২৫, ০৪:৪৭ পিএম
গাজীপুর মহানগরীর হায়দ্রাবাদ এলাকায় ঘোড়ার মাংস বিক্রি বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করেছে। জনস্বাস্থ্য ও নৈতিকতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ঘোড়া জবাই ও মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) গাজীপুর সদর সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জালাল উদ্দীন এবং সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শাহীন মিয়া এ অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযানে মাংস বিক্রেতা শফিকুল ইসলামকে ডেকে এনে কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়। তাকে ঘোড়া জবাই ও মাংস বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয় এবং এ বিষয়ে নিয়মিত নজরদারি চালানোর ঘোষণা দেওয়া হয়।
এর আগে, স্থানীয়দের মধ্যে ঘোড়ার মাংস বিক্রির বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। গত সোমবার ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক শরফ উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভায় ঘোড়ার মাংস বিক্রি বন্ধের দাবি জানানো হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার এ অভিযান পরিচালিত হয়।
সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শাহীন মিয়া জানান, "২০১১ সালের পশু জবাই ও মান নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়া ও লাইসেন্সবিহীন পশু জবাই ও মাংস বিক্রি দণ্ডনীয় অপরাধ। এতে এক বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানার বিধান রয়েছে।"
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হায়দ্রাবাদের শফিকুল ইসলাম ও নুরুল্লাহ মামুন কয়েক বছর আগে দুবাই ভ্রমণের সময় সেখানকার হোটেলগুলোতে ঘোড়ার মাংস বিক্রি হতে দেখেন। দেশে ফিরে তারা প্রথমে পরীক্ষামূলকভাবে একটি ঘোড়া জবাই করে পরিবারের মধ্যে ভাগ করে নেন। এরপর চলতি বছরের শুরুর দিকে হায়দ্রাবাদ এলাকায় দোকান খুলে বাণিজ্যিকভাবে ঘোড়া জবাই ও মাংস বিক্রি শুরু করেন।
প্রথমে প্রতি শুক্রবার ২৫০ টাকা কেজি দরে সীমিত পরিসরে বিক্রি শুরু হয়। পরে জনপ্রিয়তা বাড়ায় ১০টি পর্যন্ত ঘোড়া জবাই করে বিক্রি করা হয় এবং ক্রেতারা টোকেন নিয়ে লাইন ধরতেন। চাহিদা বাড়ায় দামও বেড়ে যায় এবং শেষ পর্যন্ত প্রতি কেজি ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জালাল উদ্দীন বলেন, "দেশে ঘোড়া জবাই ও মাংস বিক্রি অপ্রচলিত। ফলে বিভিন্ন মহল থেকে আপত্তি উঠেছে। তাই অভিযান চালানো হয়েছে।"
তিনি আরও জানান, "মাংস বিক্রেতা শফিকুল ইসলামকে ঘোড়া জবাই ও বিক্রি থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ অমান্য করলে বুধবার থেকে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
