প্রকাশিত: : এপ্রিল ১০, ২০২৫, ০৬:১০ পিএম
মাখোঁ বলেন, “স্বীকৃতি দেওয়ার পথে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে, এবং আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই আমরা তা করব। আমি কাউকে খুশি করার জন্য এটি করব না। আমি এটি করব, কারণ এক পর্যায়ে এটি করাই সঠিক হবে।”
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ জানিয়েছেন, তার দেশ আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারে। বুধবার (৯ এপ্রিল) ফ্রান্স ফাইভ টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “স্বীকৃতি দেওয়ার পথে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে, এবং আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই আমরা তা করব। আমি কাউকে খুশি করার জন্য এটি করব না। আমি এটি করব, কারণ এক পর্যায়ে এটি করাটাই সঠিক হবে।”
মাখোঁ জানান, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকট নিয়ে আগামী জুনে জাতিসংঘের যে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, সেখানে এই স্বীকৃতি চূড়ান্ত করার লক্ষ্য রয়েছে তার। ওই সম্মেলনে সৌদি আরবের সঙ্গে কো-চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে ফ্রান্স।
এই সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক বলে আখ্যা দিয়েছেন ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ভারসেন আঘাবেকিয়ান শাহিন। বার্তাসংস্থা এএফপিকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ফ্রান্সের স্বীকৃতি হবে "ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার ও দ্বিরাষ্ট্র সমাধান রক্ষার পথে ইতিবাচক অগ্রগতি।"
তবে ফ্রান্সের সম্ভাব্য এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে ইসরায়েল। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সার এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া বার্তায় বলেন, “বর্তমান বাস্তবতায়, কোনো দেশের পক্ষ থেকে একটি কাল্পনিক ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে একতরফাভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে সন্ত্রাসের জন্য পুরস্কার এবং হামাসকে উৎসাহ দেওয়ার শামিল।”
বর্তমানে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশের মধ্যে ১৪৬টি দেশ ফিলিস্তিনকে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। গত বছর আর্মেনিয়া, স্লোভেনিয়া, আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে, স্পেন, বাহামা, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, জ্যামাইকা এবং বার্বাডোস এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে।
তবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া এবং জার্মানির মতো পশ্চিমা শক্তিধর দেশগুলো এখনো ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়নি।
মাখোঁ আরও জানান, তিনি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে একটি ‘সমষ্টিগত উদ্যোগ’ চান, যার মাধ্যমে ফ্রান্স যেমন ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে, তেমনি ওই অঞ্চলের কিছু দেশও ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেবে। বর্তমানে সৌদি আরব, ইরান, ইরাক, সিরিয়া ও ইয়েমেন ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়নি।
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তকে ফ্রান্সের একটি কৌশলগত অবস্থান বলেও মনে করেন মাখোঁ। তার ভাষায়, “এতে করে আমরা তাদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান নিতে পারব, যারা ইসরায়েলের অস্তিত্ব অস্বীকার করে—যেমন ইরান। একইসঙ্গে এটি আমাদেরকে এ অঞ্চলের সমষ্টিগত নিরাপত্তায় আরও প্রতিশ্রুতিশীল করবে।”
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পরও ফ্রান্স দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে অবস্থান ধরে রেখেছে। তবে ফিলিস্তিনকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিলে সেটি হবে ফ্রান্সের জন্য একটি বড় কূটনৈতিক পরিবর্তন, যা ইসরায়েলকে ক্ষুব্ধ করতে পারে।