প্রকাশিত: : এপ্রিল ১৮, ২০২৫, ০৪:১৮ এএম
তালিকাটি কার্যকর হলে ইইউ দেশগুলোতে বাংলাদেশসহ তালিকাভুক্ত সাতটি দেশের কোনো ব্যক্তি রাজনৈতিক আশ্রয় বা মানবিক আশ্রয় চাইলে তার আবেদন সয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যেতে পারে।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের সাতটি দেশকে নিরাপদ দেশের তালিকায় নতুনভাবে যুক্ত করেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন( ইইউ)।
বুধবার নতুন এই তালিকা প্রকাশ করেছে ইইউ। নিরাপদ দেশের তালিকায় থাকা অন্য ৬ দেশ হলো; কসোভো, কলম্বিয়া, মিশর, ভারত, মরক্কো ও তিউনিসিয়া। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের এই প্রস্তাবটি কার্যকর হতে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট ও সদস্য দেশগুলোকে নতুন তালিকাটিকে অনুমোদন করতে হবে। তবে এটি ইইউর অভিবাসন নীতিতে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত।
এই তালিকাটি কার্যকর হলে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোতে বাংলাদেশসহ তালিকাভুক্ত সাতটি দেশের কোনো ব্যক্তি রাজনৈতিক আশ্রয় বা মানবিক আশ্রয় চাইলে তাদের আবেদন সয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যেতে পারে।
ইতিমধ্যে ইউরোপের বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন এই পদক্ষেপের সমালোচনা শুরু করেছে। ইউরোমেড রাইটস বলেছে সাতটি দেশকে নিরাপদ হিসেবে চিহ্নিত করা বিভ্রান্তিকর ও বিপজ্জনক। কারণ তাদের মধ্যে এমন দেশ অন্তর্ভুক্ত যেখানে অধিকার লঙ্ঘন করা হয় এবং সুরক্ষা কম। তবে ইউরোপীয় দেশগুলোর সরকার এখন আশ্রয় আবেদনগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে পারবে। নতুন করে এই সাতটি দেশকে নিরাপদ দেশ হিসেবে তালিকাভুক্ত করায় এসব দেশের মানুষের ইইউর এই দেশগুলোতে আশ্রয় পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে। এছাড়া এর মাধ্যমে ওই দেশগুলোতে আশ্রয়ে থাকা প্রবাসীদের ফেরানোর পথটি সহজ করা হবে।
শরণার্থীবিষয়ক ইইউ কমিশনার ম্যাগনাস ব্রুনার বলেছেন, অনেক সদস্য রাষ্ট্রের অসংখ্য আশ্রয় আবেদন জমা পড়ে গেছে। এগুলো নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়াকে আমরা এখন সমর্থন করতে পারি, অবৈধ অভিবাসন বন্ধ এবং অভিবাসীদের তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য ইইউর উপর গত কয়েক বছর ধরেই চাপ বাড়ছে। সেখানকার মানুষের মতে, অভিবাসনের কারণে তাদের দেশে কট্টর ডান রাজনীতি প্রসারিত হচ্ছে তাই দেশগুলো এখন অভিবাসন সীমিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।
এদিকে অভিবাসনবিষয়ক কমিশন বলছে, ইইউ-এর সদস্যপ্রার্থী দেশগুলোকে নিরাপদ দেশের মানদণ্ডগুলো পূরণ করতে হবে। তবে সংঘাতে আক্রান্ত হলে সে ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম হতে পারে বলে কমিশন জানিয়েছে। এ ক্ষেত্রে ইউক্রেনকে উদাহরণ হিসেবে ধরা যেতে পারে বলেও উল্লেখ করেছেন তারা।
অভিবাসন বিষয়ক কমিশন আরো বলেছে যে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের এই প্রকাশিত তালিকাটি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বর্ধিত বা পর্যালোচনা করা হতে পারে। বর্তমানে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক আবেদনকারী যেসব দেশ থেকে আসেন সেগুলো দেখে এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সদস্য দেশগুলো এই তালিকার সঙ্গে নিজেরা অন্যদেরকে যুক্ত করতে পারবে তবে বাদ দিতে পারবে না।
উল্লেখ্য যে, এর আগে ২০১৫ সালে এই ধরনের তালিকা উত্থাপন করেছিল ইউরোপীয় কমিশন। তবে সদস্য প্রার্থী দেশকে এই তালিকায় রাখা হবে কিনা তা নিয়ে তীব্র বিতর্কের পর ওই পরিকল্পনা বাদ দেয়া হয়।