প্রকাশিত: : মার্চ ১৬, ২০২৫, ০৪:৪৯ পিএম
ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে জার্মানি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাজার, যেখানে ৩ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বিশ্বব্যাপী পোশাক রপ্তানির প্রধান বাজারগুলোতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতাদের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণেই এই প্রবৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ১০ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেড়ে ২৬ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মতো প্রধান রপ্তানি গন্তব্যগুলোতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাজার, যেখানে ৫০ দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ার নিয়ে মোট রপ্তানি ১৩ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে ৫ দশমিক ০৬ বিলিয়ন ডলার, যা মোট রপ্তানির ১৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। কানাডায় রপ্তানির পরিমাণ ৮৪৫ মিলিয়ন ডলার।
যুক্তরাজ্যেও পোশাক রপ্তানি বেড়ে ২ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা মোট রপ্তানির ১০ দশমিক ৯৪ শতাংশ। প্রবৃদ্ধির দিক থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে রপ্তানি বেড়েছে ১১ দশমিক ৫৩ শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রে ১৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ এবং কানাডায় ১৪ দশমিক ১২ শতাংশ। তবে যুক্তরাজ্যে প্রবৃদ্ধির হার তুলনামূলক কম, ৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে জার্মানিতে সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। এছাড়া স্পেনে ২ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন, ফ্রান্সে ১ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন, ইতালিতে ১ দশমিক ০৫ বিলিয়ন, পোল্যান্ডে ১ দশমিক ১৩ বিলিয়ন এবং নেদারল্যান্ডসে ১ দশমিক ৪৩ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি হয়েছে।
বিগত বছরের তুলনায় জার্মানিতে রপ্তানি বেড়েছে ১১ দশমিক ০৩ শতাংশ, নেদারল্যান্ডসে ২৫ দশমিক ০৬ শতাংশ, পোল্যান্ডে ১২ দশমিক ০৬ শতাংশ, ডেনমার্কে ১৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ এবং সুইডেনে ২১ দশমিক ১২ শতাংশ।
বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি অপ্রচলিত বাজারেও প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে। এসব বাজারে রপ্তানি ৬ দশমিক ২৩ শতাংশ বেড়ে ৪ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। এর মধ্যে জাপানে ৮৩৯ মিলিয়ন, অস্ট্রেলিয়ায় ৫৮২ মিলিয়ন এবং ভারতে ৪৭৮ মিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে।
তুরস্ক ও মেক্সিকোতেও যথাক্রমে ৩০৫ মিলিয়ন ও ২২৯ মিলিয়ন ডলারের রপ্তানি হয়েছে। প্রবৃদ্ধির দিক থেকে ভারতে ১৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ, মেক্সিকোতে ২৫ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং তুরস্কে ৩২ দশমিক ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে রাশিয়া, কোরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মালয়েশিয়ায় রপ্তানির হার কমেছে।
বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, বাংলাদেশ এখনো প্রধানত ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের ওপর নির্ভরশীল। তবে কৌশলগত গবেষণা ও বিনিয়োগের মাধ্যমে অপ্রচলিত বাজারেও প্রবৃদ্ধি বাড়ানো সম্ভব। তিনি আরও বলেন, ‘বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিস্থিতি পরিবর্তিত হচ্ছে, যা বাংলাদেশের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করতে পারে। তবে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে বিনিয়োগের প্রয়োজন।’
রুবেল ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পে বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেন, যাতে বাংলাদেশের পোশাক খাত দীর্ঘমেয়াদে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে।